ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ যা সাধারণত এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার মাধ্যমে ছড়ায়। প্রতিবছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও অন্যান্য উপক্রান্তীয় অঞ্চলে। এই রোগটি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিকভাবে শনাক্ত না করা হয়, তবে এটি মারাত্মক হতে পারে।
এই লেখায় আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ, কীভাবে তা শনাক্ত করা যায়, প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ সম্পর্কে।
ডেঙ্গু কী? (What is Dengue?)
ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা মূলত এডিস মশার কামড়ে ছড়ায়। এটি Flavivirus গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত এবং চারটি ভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে – DEN-1, DEN-2, DEN-3, এবং DEN-4। কোনো ব্যক্তি যদি একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন, তবে সেই টাইপের ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, কিন্তু অন্য টাইপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণসমূহ (Symptoms of Dengue)
ডেঙ্গুর লক্ষণ সাধারণত সংক্রমণের ৪-১০ দিনের মধ্যে দেখা দেয়। এখানে প্রধান লক্ষণগুলো তালিকাভুক্ত করা হলো:
১. উচ্চ জ্বর (High Fever)
ডেঙ্গুর সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো ১০২-১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর। হঠাৎ করে শুরু হয় এবং সাধারণত দুই থেকে সাত দিন স্থায়ী হয়।
২. মাথা ব্যথা (Severe Headache)
চোখের পেছনে তীব্র ব্যথাসহ মাথার সামনের অংশে ব্যথা অনুভূত হয়।
৩. মাংসপেশি ও জয়েন্টে ব্যথা (Muscle and Joint Pain)
ডেঙ্গুকে অনেক সময় “Breakbone Fever” বলা হয় কারণ এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে ভেঙে পড়ার মতো ব্যথা হয়।
৪. চোখের পেছনে ব্যথা (Pain Behind the Eyes)
৫. চামড়ায় লালচে দাগ (Skin Rash)
জ্বরের তৃতীয় বা চতুর্থ দিনে রোগীর শরীরে লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।
৬. বমি ভাব ও বমি (Nausea and Vomiting)
৭. অবসাদ বা দুর্বলতা (Extreme Fatigue)
৮. রক্তক্ষরণ (Bleeding)
ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, অথবা চামড়ার নিচে রক্ত জমা হতে পারে।
ডেঙ্গুর বিভিন্ন ধরণ (Types of Dengue)
১. Classical Dengue Fever
এই ধরণের ডেঙ্গুতে সাধারণ লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় যেমন জ্বর, মাথা ব্যথা ইত্যাদি।
২. Dengue Hemorrhagic Fever (DHF)
এতে রক্তক্ষরণের উপসর্গ দেখা যায়, এবং এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
৩. Dengue Shock Syndrome (DSS)
ডেঙ্গুর সবচেয়ে বিপজ্জনক রূপ। রক্তচাপ অত্যন্ত কমে যায়, রোগী শকে চলে যেতে পারে।
ডেঙ্গুর লক্ষণ কখন গুরুতর হয়?
যদি রোগী নিচের উপসর্গগুলি প্রদর্শন করে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে:
- বারবার বমি
- পেট ফোলা বা ব্যথা
- নিশ্বাস নিতে কষ্ট
- অত্যন্ত দুর্বলতা
- ব্লিডিং বা রক্তক্ষরণ
ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষা (Diagnosis of Dengue)
ডেঙ্গু শনাক্ত করতে নিচের টেস্টগুলি করা হয়:
- NS1 Antigen Test: প্রাথমিক ১-৫ দিনের মধ্যে করা হয়।
- IgM and IgG Antibody Test: ৫-৭ দিনের পরে এন্টিবডি পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়।
- Complete Blood Count (CBC): প্লেটলেট কাউন্ট কমে গেলে তা ডেঙ্গুর লক্ষণ হতে পারে।
ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা (Treatment of Dengue)
ডেঙ্গুর জন্য এখনও কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। তবে লক্ষণ উপশমে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়:
- প্রচুর বিশ্রাম
- তরল গ্রহণ (ORS, জুস, স্যুপ)
- প্যারাসিটামল খাওয়া (জ্বর কমাতে)
- এসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন পরিহার করা উচিত
গুরুতর অবস্থায় রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
ডেঙ্গুর প্রতিরোধ (Prevention of Dengue)
- এডিস মশার বংশবৃদ্ধি রোধ করা
- বাসাবাড়ির চারপাশে জমে থাকা পানি ফেলে দেওয়া
- মশারি ব্যবহার
- ফুলহাতা জামা ও লম্বা প্যান্ট পরা
- মশা প্রতিরোধী ক্রিম ব্যবহার করা
গর্ভবতী নারীদের জন্য ডেঙ্গু: বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন
গর্ভবতী নারীরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে জটিলতা বেশি হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টেস্ট ও নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
ডেঙ্গু ও কোভিড-১৯: পার্থক্য কী?
যদিও উভয় রোগের প্রাথমিক লক্ষণ একই রকম, যেমন জ্বর ও দুর্বলতা, তবে ডেঙ্গুতে র্যাশ ও রক্তক্ষরণের ঝুঁকি থাকে, যা কোভিড-১৯ এ কম দেখা যায়।
উপসংহার
ডেঙ্গু একটি গুরুতর রোগ হলেও সচেতনতা, আগেভাগে লক্ষণ চিহ্নিত করা এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এই রোগ থেকে সেরে ওঠা সম্ভব। সবসময় সাবধান থাকতে হবে, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে। সময়মতো ডাক্তারের পরামর্শ ও যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করলেই ডেঙ্গুর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য (FAQ) – ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ
১. ডেঙ্গুর লক্ষণ কতদিন পর দেখা যায়?
ডেঙ্গু ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর সাধারণত ৪ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এর লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। এই সময়টিকে “ইনকিউবেশন পিরিয়ড” বলা হয়। এই সময়ের মধ্যে রোগীর শরীরে ভাইরাস সক্রিয় হয়ে বিভিন্ন উপসর্গ তৈরি করে, যেমন হঠাৎ উচ্চ জ্বর, মাথা ব্যথা, চোখের পেছনে চাপ অনুভব ইত্যাদি। শুরুতেই লক্ষণ না দেখা দিলেও সতর্ক থাকা জরুরি, বিশেষত যদি আপনি ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকায় অবস্থান করেন।
২. ডেঙ্গু কি ছোঁয়াচে রোগ?
না, ডেঙ্গু এক ব্যক্তি থেকে আরেক জনে সরাসরি সংক্রমিত হয় না। এটি একটি মশাবাহিত রোগ। ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী এডিস মশা যখন ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড়ায় এবং তারপর সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায়, তখন ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। তাই, একজন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলেও আপনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবেন না—তবে আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে থাকা মশা থেকে সতর্ক থাকা আবশ্যক।

৩. ডেঙ্গু হলে কি ঠান্ডা লাগে?
ডেঙ্গুতে সাধারণত ঠান্ডা লাগার উপসর্গটি সরাসরি দেখা যায় না, তবে জ্বরের সময় ঠাণ্ডা লাগার অনুভূতি বা শীত শীত লাগা হতে পারে। কিছু রোগী জ্বরের কারণে কাঁপুনি অনুভব করে। যদিও এটি একটি প্রাথমিক উপসর্গ হতে পারে, কিন্তু একে শুধুমাত্র ঠাণ্ডা ভেবে ভুল করা উচিত নয়। যদি জ্বরের সঙ্গে চোখের পেছনে ব্যথা, গায়ে র্যাশ বা দুর্বলতা দেখা দেয়, তাহলে ডেঙ্গু টেস্ট করানো বাঞ্ছনীয়।
৪. প্লেটলেট কমে গেলে কী করণীয়?
ডেঙ্গুর একটি মারাত্মক দিক হল প্লেটলেট সংখ্যা কমে যাওয়া। সাধারণ মানুষের রক্তে প্লেটলেট থাকে ১.৫ লাখ থেকে ৪.৫ লাখ প্রতি মাইক্রোলিটার রক্তে। যদি এই সংখ্যা ৫০,০০০-এর নিচে নেমে যায়, তবে এটি একটি সতর্কতা সংকেত। ২০,০০০-এর নিচে নামলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা জরুরি, কারণ এটি রক্তক্ষরণজনিত জটিলতা তৈরি করতে পারে। প্রচুর তরল পান করা, চিকিৎসকের পরামর্শমতো বিশ্রাম এবং নিয়মিত ব্লাড কাউন্ট পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।
৫. কীভাবে বুঝবো আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত?
ডেঙ্গু শনাক্ত করার জন্য নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি খেয়াল রাখতে হবে:
- হঠাৎ উচ্চমাত্রার জ্বর
- চোখের পেছনে ব্যথা
- মাথা, জয়েন্ট এবং মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা
- শরীরে লালচে দাগ বা র্যাশ
- বমি ভাব বা বমি
- দুর্বলতা
এসব উপসর্গ থাকলে অবিলম্বে ডেঙ্গু পরীক্ষার (NS1, IgM, IgG) জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
৬. ডেঙ্গুর ওষুধ কী?
বর্তমানে ডেঙ্গুর জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। তবে উপসর্গ উপশমের জন্য নিম্নলিখিত ওষুধ ও উপায়গুলো অনুসরণ করা হয়:
- প্যারাসিটামল: জ্বর ও ব্যথা কমাতে
- ORS ও তরল: শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে
- সঠিক বিশ্রাম: শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সময় দিতে
অবশ্যই এসপিরিন, আইবুপ্রোফেন ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে, কারণ এগুলো রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৭. ডেঙ্গুতে কী খাওয়া উচিত?
ডেঙ্গু আক্রান্ত অবস্থায় সঠিক খাদ্যাভ্যাস রোগমুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিচের খাবারগুলো পরামর্শযোগ্য:
- প্রচুর পানি ও তরল (ORS, ডাবের পানি, ফলের রস)
- ফল (পেঁপে, আপেল, কিউই, কলা, জাম)
- হালকা প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার (সিদ্ধ ডিম, মুরগির স্যুপ)
- সবজি ও খিচুড়ি
- পেঁপে পাতার রস অনেক সময় প্লেটলেট বাড়াতে সহায়ক হতে পারে
৮. ডেঙ্গু থেকে পুরোপুরি সেরে উঠতে কত সময় লাগে?
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সাধারণত ৭-১৪ দিনের মধ্যে সেরে ওঠেন, তবে রোগীর অবস্থা, প্লেটলেট কাউন্ট এবং ইমিউন সিস্টেম অনুযায়ী এই সময় ভিন্ন হতে পারে। অনেক সময় রোগী জ্বর চলে যাওয়ার পরেও দুর্বলতা ও অরুচি অনুভব করতে পারেন। সম্পূর্ণ সুস্থ হতে বিশ্রাম, সঠিক খাদ্য এবং পর্যাপ্ত পানি পান অব্যাহত রাখা উচিত।
৯. শিশুরা কি ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হয়?
হ্যাঁ, শিশুদের মধ্যে ডেঙ্গু বেশি ভয়ানক রূপ নিতে পারে, কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল। বাচ্চাদের মধ্যে ঝুঁকি বেশি, বিশেষ করে যদি তারা যথেষ্ট পানি না খায় বা প্লেটলেট দ্রুত কমে যায়। শিশুরা অনেক সময় উপসর্গ সঠিকভাবে জানাতে পারে না, তাই তাদের শরীরে র্যাশ, অস্বাভাবিক কান্না বা খাওয়ায় অরুচি দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
১০. ডেঙ্গুর সময় মাংস খাওয়া যাবে কি?
ডেঙ্গুতে হালকা রান্না করা মাংস (যেমন সিদ্ধ মুরগি) খাওয়া যেতে পারে, কারণ এটি প্রোটিনের উৎস। তবে গরু, খাসি বা অতিরিক্ত মসলা ও তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। হজমে সমস্যা হতে পারে এবং তা শরীরের দুর্বলতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
১১. গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু হলে কী ঝুঁকি থাকে?
গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। এতে মা ও গর্ভস্থ শিশুর জন্য জটিলতা দেখা দিতে পারে, যেমনঃ
- গর্ভকালীন রক্তক্ষরণ
- অপরিণত শিশু জন্ম
- শিশুর ওজন কম হওয়া
- প্রসবকালীন জটিলতা তাই গর্ভবতী নারী ডেঙ্গু উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিত।
১২. ডেঙ্গুর জন্য কি টিকা আছে?
বর্তমানে “Dengvaxia” নামে একটি টিকা (vaccine) রয়েছে যা কিছু নির্দিষ্ট দেশ অনুমোদন দিয়েছে, তবে এটি সব দেশে বা সবার জন্য উপযোগী নয়। এটি সাধারণত ৯ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের জন্য এবং যারা পূর্বে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের জন্য প্রযোজ্য।
১৩. ডেঙ্গু কি প্রতি বছর হতে পারে?
হ্যাঁ, ডেঙ্গুতে একাধিকবার আক্রান্ত হওয়া সম্ভব। ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ভিন্ন ধরনের স্ট্রেইন আছে (DEN-1 থেকে DEN-4)। একবার কোনো একটি স্ট্রেইনে আক্রান্ত হলে, সেই স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে শরীর প্রতিরোধ তৈরি করে। তবে বাকি তিনটি স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে আপনি ঝুঁকিতে থাকেন।
১৪. কিভাবে এডিস মশা চিনবেন?
এডিস মশা সাধারণ মশার থেকে আলাদা। এদের গায়ে সাদা ও কালো ডোরাকাটা দাগ থাকে। এডিস মশা সাধারণত সকালের দিকে এবং বিকেলে কামড়ায়। এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো তারা দিনে কামড়ায়, যা অন্যান্য মশার থেকে ভিন্ন।
১৫. ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী করণীয়?
- সপ্তাহে অন্তত একবার জমা পানি পরিষ্কার করুন
- ফুলহাতা জামা ও প্যান্ট পরুন
- জানালায় জাল দিন
- মশারি ব্যবহার করুন
- বাচ্চাদের মশার স্প্রে বা ক্রিম ব্যবহার করুন
১৬. ডেঙ্গুতে গায়ে ব্যথা কতদিন থাকে?
গায়ে ব্যথা বা জয়েন্ট পেইন সাধারণত জ্বর শুরু হওয়ার প্রথম ৩-৫ দিন স্থায়ী হয়। কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা আরো কিছুদিন থাকতে পারে। এটি স্বাভাবিক হলেও তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
১৭. ডেঙ্গুতে চিকিৎসা না করলে কী হতে পারে?
ডেঙ্গু চিকিৎসা ছাড়া放ে রাখলে তা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে পরিণত হতে পারে। এতে মারাত্মক রক্তক্ষরণ, রক্তচাপ হ্রাস ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে পারে। তাই সময়মত সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
১৮. বাড়িতে ডেঙ্গুর রোগী থাকলে কী করবো?
- রোগীকে মশারির ভিতরে রাখুন
- সব জানালা-দরজা ঢেকে রাখুন
- চারপাশ পরিষ্কার রাখুন
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ও খাবার দিন
- রোগীর ব্লাড কাউন্ট পর্যবেক্ষণে রাখুন
১৯. ডেঙ্গু রোগীকে কোন খাবার দেওয়া উচিত নয়?
- মসলাযুক্ত খাবার
- খুব ঠান্ডা বা অতিরিক্ত গরম খাবার
- ফাস্ট ফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার
- কাঁচা মাছ-মাংস এসব খাবার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
২০. ডেঙ্গু কি কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে?
হ্যাঁ, ডেঙ্গুর গুরুতর রূপে অ্যকিউট কিডনি ইনজুরি (AKI) হতে পারে, বিশেষ করে যদি শরীর ডিহাইড্রেটেড থাকে বা রক্তচাপ কমে যায়। এ ধরনের জটিলতা হলে ডায়ালাইসিস পর্যন্ত প্রয়োজন হতে পারে। তাই ডেঙ্গুর চিকিৎসা চলাকালে রোগীর কিডনির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।